নিজের অনুভূতি প্রকাশ না করে চেপে রাখলে কি হবে?
বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় :
২৩-১০-২০২৩ ১২:৩০:৫২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৩-১০-২০২৩ ১২:৩২:২৯ অপরাহ্ন
ছবিঃ নিউজ২৪ , টিভি থেকে নেওয়া
অন্তু (ছদ্মনাম), তার প্রেমিকার কিছু আচরণ সে একেবারেই পছন্দ করে না, এতে যদিও তার খুব রাগ লাগে কিন্তু কিছুই বলতে পারছে না। অন্যদিকে পরী (ছদ্মনাম)। তাকে নিয়ে তার মা-বাবার সব সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছে না। এতে তার খুব কষ্ট হয় এই ভেবে যে, কেন তারা তাকে বুঝে না। আবার আকাশ (ছদ্মনাম), তার একজন সহকর্মী তাকে এমন কিছু কথা বলেছে, যে জন্য তার খুব কষ্ট হচ্ছে। কারণ সে কাজের জন্য সে দায়ী নয় কিন্তু এই কথাটি সে বলতেও পারছে না।
এই তিনজন মানুষই কিছু বিষয়ে কাছের মানুষ থেকে যে অপ্রত্যাশিত আচরণ পেয়েছে, তা তারা পুরোপুরি মেনে নিতেও পারছে না। আবার সরাসরি বলতেও পারছে না। ফলে সেটি ধীরে ধীরে তাদের সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যখনই আমরা কারও সাথে যোগাযোগ করি বা কথা বলতে যাই, তখনই এরকম অনেক ঘটনা ঘটে।
আমরা প্রধানত তিন ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হই। যেমন- ক) আমি অন্যদের সাথে আমার সংবেদনশীল বিষয়ের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারি না খ) প্রকাশ করলেও সেটি নেতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসে এবং গ) যখন আমার সত্যিই না বলা উচিত কিন্তু না বলতে সমস্যা হচ্ছে। এসব কারণে কেউ যদি তার অনুভূতি নিজের মধ্যে চেপে রাখে, তবে সেটি উদ্বেগ, বিষন্নতা, অসন্তুষ্টি এবং এমনকি শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে পারে। এছাড়া ব্যক্তিগত এবং পেশাগত সম্পর্কের ক্ষেত্রেও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
নিজের অনুভূতি প্রকাশ না করে চেপে রাখলে কি হবে?
নিজেকে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন মনে হতে পারে। নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হতে পারে। সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে। এছাড়া নিজের আচরণে হঠাৎ করে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। উদাহরণস্বরূপ- ছেলেটি খুব শান্ত ছিল কিন্তু হঠাৎ কি জানি হল, সে খুব সামান্য করণেই প্রচণ্ড রেগে গেল যা অন্যদের কাছে মেনে নেয়া কষ্টকর হতে পারে কিংবা সেটি নেতিবাচক কোন ফলাফল নিয়ে আসতে পারে। পরিশেষে হতাশা, চাপ, অসন্তোষ, মেজাজের হিংস্রতা বা উদ্বেগ দেখা দিতে পারে এবং মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
কেন আমাদের মনের কথা বলতে এত কষ্ট কিংবা বাধা অনুভব করি?
ক) আপনি হয়তো আপনার অনুভূতি ধরতেই পারছেন না, খ) আপনি মনে করেন যে এমন অনুভূতি শুধু আপনারই আছে, গ) আপনি বিশ্বাস করেন যে, কারও সাথে কিছু শেয়ার করলে তাতে কিছুই পরিবর্তন হবে না, ঘ) আপনি বিশ্বাস করেন যে, অন্যরা এটিকে আপনার দুর্বলতা বা অক্ষমতা হিসাবে দেখা হতে পারে, ঙ) আপনি চান না যে, অন্যরা আপনাকে নিয়ে চিন্তা করুক, চ) আপনি মনে করেন যে, কেউ আপনাকে ভালোবাসলে, সে না বললেও সব বুঝবে, ছ) আপনি ভয় পাচ্ছেন যে, আপনার সব কথা কেউ জানলে পরে সমস্যা তৈরি হতে পারে, জ) কারও কাছে অপছন্দনীয় হওয়ার ভয় থাকতে পারে, ঝ) ব্যক্তিত্ব (আপনি কিভাবে বড় হয়েছেন?)- কিছু মানুষই থাকে যারা এমনিতেই চাপা স্বভাবের হয়, ঞ) সামাজিক ভীতির জন্য কেউ কেউ নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে।
কিভাবে নিজের অনুভূতি অন্যের কাছে প্রকাশ বা শেয়ার করবেন?
শুরুতেই, গুরুত্ব ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কোন কথাটি আগে শেয়ার করবেন তা নির্ধারণ করুন এবং সঠিক শ্রোতা ও সময় বেছে নিন। প্রথমত, আপনার অনুভূতি সম্পর্কে সচেতন হোন। মনে করুন যে, আপনার অনুভূতির সঠিক বা ভুল বলে কিছু নেই এবং এটি জীবনে যখন-তখন আসতে পারে। পাশাপাশি, কিছু বলার আগে মনকে শান্ত করে নিন। দ্বিতীয়ত, কিভাবে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে হবে তার দক্ষতা বা পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন। তৃতীয়ত, সবার কাছে সব না বলে, যাকে বিশ্বাসযোগ্য, কাছের মনে হয়, আপনাকে বুঝে বা যার জীবনে আপনার গুরুত্ব আছে তাকেই মনের কথা খুলে বলুন।
নিজের অনুভূতি প্রকাশ করার ক্ষেত্রে কি পদ্ধতি অনুসরণ বা দক্ষতা অর্জন করতে হবে?
১। মনের দক্ষতা উন্নত করতে হবে: অবাস্তব ব্যক্তিগত এবং সম্পর্কের নিয়মগুলো (যেমন-আমাকে সবসময় অন্যদের কাছ থেকে অনুমোদন পেতে হবে, পুরুষরা কাঁদে না, আমাদের দাম্পত্য জীবনে কখনই বিবাদ হওয়া উচিত নয়, সন্তানদের তাদের মা বাবা-কে চ্যালেঞ্জ করা উচিত নয়, ইত্যাদি), যা আবেগ প্রকাশ করার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্থ করে সেসব বিষয়কে বাস্তবসম্মত বিষয় দ্বারা প্রতিস্থাপন করা শিখতে হবে। পাশাপাশি বাস্তব নির্ভর প্রত্যাশা এবং নিজেকে বা অন্যদেরকে নির্ভুলভাবে বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
২। যোগাযোগ দক্ষতা উন্নত করতে হবে: এক্ষেত্রে আমি একাধিক পদ্ধতি বা উপায় নিয়ে কথা বলব।
ক) দৃঢ়তার সঙ্গে সচেতন যোগাযোগ (Decisive Correspondence): এই দক্ষতার মাধ্যমে কোন ব্যক্তি তার মতামত, অনুভূতি, দৃষ্টিভঙ্গি এবং অধিকারগুলো অযথা উদ্বেগ ছাড়াই স্পষ্টভাবে অন্যের অধিকার লঙ্ঘন না করে প্রকাশ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটা পরিস্থিতি বিবেচনা করা যাক (যেমন-অনেকদিন আগে আপনার এক বন্ধু কিছু বই ধার
সুত্র-নিউজ২৪
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin
কমেন্ট বক্স